সে সময় আমিও উপস্থিত ছিলাম। সেখানে আবু সাঈদের পরিবারের সদস্যরাও ছিল। তাদের সঙ্গে আমারও আলাদাভাবে কথা হয়েছে। আমাকে বলা হয়েছে, আমরা কোনো কিছু চাই না, আমরা বিচার চাই।’প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি মৃত্যুর জন্য, প্রতিটি হতাহতের ঘটনার জন্য সরকার এবং বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত, দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। হয়তো কোনো একটি তৃতীয় পক্ষ এটির সুবিধা নিচ্ছে। এসব ঘটনার ক্ষতিগ্রস্তরা যেমন বিচার চান, সরকারও একইভাবে বিচার চায়।তিনি বলেন, শিক্ষার্থী আন্দোলনকারী যারা, তাদের যে উদ্দেশ্য ছিল, তাদের যে দাবি ছিল, তার মধ্যে তৃতীয় পক্ষ ঢুকে অন্য উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য যে ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, চোখের সামনে সব প্রমাণ আছে। যারা নরসিংদীতে জেল ভেঙে কয়েদিদের বের করে নিয়ে এসেছে, উচ্চ পর্যায়ের জঙ্গিদের বের করে নিয়ে এসেছে, জেলের স্টাফদের বন্দি করে রেখেছিল, যত ধরনের অস্ত্র লুট করেছিল, এগুলো শিক্ষার্থীদের কাজ হতে পারে না। মেট্রো রেল, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ যার উপকারভোগী, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, যে অধিদপ্তর দেশে দুর্যোগকালে সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করে, বিটিভি, সেতু ভবন, এক্সপ্রেসওয়ের টোল প্লাজাসহ প্রতিটি সরকারি স্থাপনা, যেগুলো সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করে—এগুলোতে যারা ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, এটি শিক্ষার্থীদের কাজ হতে পারে না। এটি করেছে সেই তৃতীয় পক্ষ সন্ত্রাসীরা এবং তারা এমন অবস্থা সৃষ্টির চেষ্টা করেছে, যেন এখানে হতাহতের ঘটনা ঘটে। তারা শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে, শিক্ষার্থীদের আবেগ-অনুভূতিকে অপব্যবহার করে তারা এ কাজগুলো করেছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী তথা পুলিশ, র্যাব, বিজিবি এবং অন্য যারা আছে, কাউকেই গুলি করার কোনো অনুমতি ছিল না। সংবিধান এবং আইনের অধীনে তাদের কাজ করতে হয়েছে। তাই বলে আমি এটিও অস্বীকার করছি না, ক্ষেত্রবিশেষে কেউ কেউ মাঠে আইন ভাঙেনি। আমরা এটি তদন্ত করে তাদেরও বিচারের আওতায় আনব।’
তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার আন্দোলনের শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা দিয়েছে এবং তাদের আলাদা রেখেছে। সরকার কখনোই তাদের দোষারোপ করেনি। আমাদের সব বক্তব্যে যেগুলোকে আমরা দোষ দিয়েছি, তার একটিও শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে নয়, প্রতিটিই সন্ত্রাসীদের উদ্দেশে। আমাদের সব আইনের প্রয়োগ একটিও শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে নয়। প্রতিটি সন্ত্রাসীদের উদ্দেশে।’
তিনি আরো যোগ করেন, যারা সহিংসতায় মারা গেছে, তারা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। সব মৃত্যুর বিচার এ দেশ করবে, এ দেশের সরকার করবে এবং স্বাধীন বিচার বিভাগীয় কমিশনের মাধ্যমে করবে। প্রয়োজনে স্বচ্ছতার স্বার্থে বিদেশি অভিজ্ঞ ও পেশাদারদের সম্পৃক্ত করা হবে।