

ক) পূর্ব থেকেই নির্ধারিত। মহান আল্লাহ বলেন, ‘কোনো মুমিনকে হত্যা করা কোনো মুমিনের কাজ নয়, তবে ভুলবশত করে ফেললে (তা সম্পূর্ণ) ভিন্ন কথা। যে ব্যক্তি ভুলবশত কোনো মুমিনকে হত্যা করে, সে একজন দাস মুক্ত করে দেবে এবং (তার সঙ্গে) নিহত ব্যক্তির পরিবার-পরিজনকে রক্তের (ন্যায়সংগত) মূল্য পরিশোধ করে দেবে।
উল্লেখ্য যে রৌপ্য মুদ্রার ক্ষেত্রে হানাফি মাজহাব ছাড়া বাকি তিন মাজহাব মতে, ১২ হাজার দিরহাম পরিশোধ করতে হবে। এবং ২০০ গরু বা দুই হাজার বকরি বা তার মূল্য দিয়েও দিয়াত আদায় করা যায়। (আল-মুগনি : ১২/৬-৮)
খ) এই ক্ষতিপূরণ দিতে অপরাধী অসমর্থ হলে অভিভাবক বা নিজ সম্প্রদায় তা বহন করবে।
ঘ) ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে ক্ষমা করে দেওয়া। যদি স্বেচ্ছায় অর্থাত্ কোনো ধরনের বল প্রয়োগ ছাড়া ক্ষমা করে দেয় তাহলেই শুধু এই ক্ষমা করে দেওয়া গ্রহণযোগ্য হবে। (সুরা : নিসা, আয়াত : ৯২; সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৩৪)
ইসলামী রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও তার দায়িত্বশীলদের দায়িত্ব হলো, আইনের শাসন কায়েম করা। শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেন, ‘ইসলামী দণ্ডবিধি প্রয়োগ করা ছাড়া সত্ কাজের আদেশ ও অসত্ কাজ থেকে নিষেধ (যার নির্দেশ কোরআনে দেওয়া হয়েছে), তা পূর্ণতা লাভ করে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ শাসকের মাধ্যমে সেসব বিষয় সংশোধন করেন, যা কোরআনের মাধ্যমে করেন না। ইসলামী দণ্ডবিধি যথাযথভাবে প্রয়োগ করা মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব। এই দায়িত্ব পালন করা হয় যখন করণীয় কাজ ত্যাগ এবং বর্জনীয় কাজে লিপ্ত হওয়ার কারণে শাস্তি দেওয়া হয়।’ (আল-হিসবাহ, পৃষ্ঠা-৪৫)
ইচ্ছাকৃত হত্যাকারীর তাওবা
ইচ্ছাকৃত মানুষ হত্যাকারীর ওপর তিনটি হক বর্তায়। আল্লাহর হক, নিহত ব্যক্তির হক ও ওয়ারিশদের হক। আল্লাহর হক একমাত্র তাওবার দ্বারা আদায় করতে হবে। ওয়ারিশদের হক হলো তাদের কাছে নিজেকে সমর্পণ করতে হবে, যেন তারা তার থেকে বদলা নিতে সমর্থ হয় (যদি ইসলামী বিধান কোনো দেশে জারি থাকে)। হয়তো কিসাস নিয়ে অথবা মুক্তিপণ নিয়ে বা ক্ষমা নিয়ে কিসাস কার্যকর করা হবে।
এরপর বাকি থাকে নিহত ব্যক্তির অধিকার, যা এ দুনিয়ায় পূরণ করা সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে ইসলামী আইনজ্ঞরা বলেন, যদি হত্যাকারী খাঁটিভাবে তাওবা করে, তাহলে আল্লাহ তার ওপর নিহত ব্যক্তির হক উঠিয়ে নেবেন এবং কিয়ামতের দিন নিজের পক্ষ থেকে নিহত ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণ দিয়ে দেবেন। আর এটি সর্বোত্তম অভিমত। (মাদারেজুস সালেকিন : ১/২৯৯)