শনিবার, ১২ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ
রিয়াদে মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত
রিয়াদ থেকে সিলেট আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের দাবি জানান সৌদিআরব সিলেট প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধারা;
রিয়াদে সিলেট জেলা বিএনপির উদ্যোগে জননেতা আজিজুর রহমান কে সংবর্ধনা প্রদান; ফারুক আহমেদ চাঁন,সৌদি আরব!”
বায়তুল মোকাররমে ঈদুল ফিতরের ৫ জামাত
কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপির উদ্যোগে সাংগঠনিক সভা ২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ইশরাককে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র ঘোষণা আদালতের
যারা চাঁদা নেয় তারা মনে করে এটা তার অধিকার : আসিফ মাহমুদ
ড. ইউনূসকে শুভেচ্ছা জানিয়ে চিঠি লিখেছেন ট্রাম্প
সৌদি আরবের রিয়াদে হারামাইন শিল্পীগোষ্ঠীর উদ্যোগে পবিত্র মাহে রমজানের তাৎপর্য শীর্ষক আলোচনা সভা এবং ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রিয়াদে মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে প্রবাসী লক্ষীপুর জেলা বিএনপির উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

কোরআনের বর্ণনায় হত্যাকাণ্ডের ক্ষতিপূরণ

আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্রকে বাহ্যত কঠোর হতে হয়। কিন্তু এই কঠোরতার মধ্যে নিহিত আছে সমাজ ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তা। মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে বোধসম্পন্ন ব্যক্তিরা! কিসাসের মধ্যে তোমাদের জন্য আছে জীবন, যাতে তোমরা সাবধান হতে পারো।’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ১৭৯)ইচ্ছাকৃত হত্যাকাণ্ডের জন্য কিসাস।

যেমন—প্রাণের বদলে প্রাণ, চোখের বদলে চোখ, নাকের বদলে নাক, কানের বদলে কান, দাঁতের বদলে দাঁত এবং সব রকমের জখমের জন্য সমপর্যায়ের বদলা। (সুরা : মায়িদা, আয়াত : ৪৫ )ইচ্ছাকৃত হত্যার উদ্দেশ্যে—কাউকে এমন অস্ত্র দ্বারা হত্যা করা, যা লৌহ নির্মিত অথবা অঙ্গচ্ছেদনের ব্যাপারে লৌহ নির্মিত অস্ত্রের মতো। এরূপ হত্যাকারীর পার্থিব শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। তবে যদি ভিক্টিমের প্রতিনিধি ক্ষমা করে দেয় বা শাস্তি কিছুটা হ্রাস করে দেয়, তাহলে অপরাধী কোনো রকম কার্পণ্য ছাড়াই ‘দিয়াত’ (রক্তপণ/ক্ষতিপূরণ) প্রদান করবে।

(সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ১৭৮)‘দিয়াত’ হবে চারভাবে। যথা—

ক) পূর্ব থেকেই নির্ধারিত। মহান আল্লাহ বলেন, ‘কোনো মুমিনকে হত্যা করা কোনো মুমিনের কাজ নয়, তবে ভুলবশত করে ফেললে (তা সম্পূর্ণ) ভিন্ন কথা। যে ব্যক্তি ভুলবশত কোনো মুমিনকে হত্যা করে, সে একজন দাস মুক্ত করে দেবে এবং (তার সঙ্গে) নিহত ব্যক্তির পরিবার-পরিজনকে রক্তের (ন্যায়সংগত) মূল্য পরিশোধ করে দেবে।

তবে (স্বজনরা) যদি (রক্তপণ) ক্ষমা করে দেয় (তাহলে তা ভিন্ন কথা)…।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ৯২)শরিয়ত মতে, দিয়াত বা আর্থিক ক্ষতিপূরণের বিস্তারিত বিবরণ হলো—১০০ উট আর মুদ্রার মাধ্যমে দিলে (হানাফি মাজহাব মতে) ১০ হাজার দিরহাম (এক দিরহাম সমান ২.৯৭৫ গ্রাম রুপা) অথবা এক হাজার দিনার (এক দিনার সমান ৪.২৫ গ্রাম স্বর্ণ) বা তার মূল্যমান দ্রব্য কিংবা অর্থ প্রদান করতে হবে। (হিদায়া : ৪/৪৬০; রাওয়াইয়ুল বয়ান ফি তাফসিরি আয়াতিল আহকাম, খণ্ড : ১, পৃষ্ঠা-৩৬০; ফাতহুল কাদির : ৮/৩০৪)

উল্লেখ্য যে রৌপ্য মুদ্রার ক্ষেত্রে হানাফি মাজহাব ছাড়া বাকি তিন মাজহাব মতে, ১২ হাজার দিরহাম পরিশোধ করতে হবে। এবং ২০০ গরু বা দুই হাজার বকরি বা তার মূল্য দিয়েও দিয়াত আদায় করা যায়। (আল-মুগনি : ১২/৬-৮)

খ) এই ক্ষতিপূরণ দিতে অপরাধী অসমর্থ হলে অভিভাবক বা নিজ সম্প্রদায় তা বহন করবে।

(মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হাদিস : ১৫৬৯)গ) হত্যাকারীর পরিবার এই ক্ষতিপূরণ দিতে ব্যর্থ হলে ইসলামী সরকার তা বহন করবে। (মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হাদিস : ১৫৫৮)

ঘ) ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে ক্ষমা করে দেওয়া। যদি স্বেচ্ছায় অর্থাত্ কোনো ধরনের বল প্রয়োগ ছাড়া ক্ষমা করে দেয় তাহলেই শুধু এই ক্ষমা করে দেওয়া গ্রহণযোগ্য হবে। (সুরা : নিসা, আয়াত : ৯২; সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৩৪)

ইসলামী রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও তার দায়িত্বশীলদের দায়িত্ব হলো, আইনের শাসন কায়েম করা। শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেন, ‘ইসলামী দণ্ডবিধি প্রয়োগ করা ছাড়া সত্ কাজের আদেশ ও অসত্ কাজ থেকে নিষেধ (যার নির্দেশ কোরআনে দেওয়া হয়েছে), তা পূর্ণতা লাভ করে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ শাসকের মাধ্যমে সেসব বিষয় সংশোধন করেন, যা কোরআনের মাধ্যমে করেন না। ইসলামী দণ্ডবিধি যথাযথভাবে প্রয়োগ করা মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব। এই দায়িত্ব পালন করা হয় যখন করণীয় কাজ ত্যাগ এবং বর্জনীয় কাজে লিপ্ত হওয়ার কারণে শাস্তি দেওয়া হয়।’ (আল-হিসবাহ, পৃষ্ঠা-৪৫)

ইচ্ছাকৃত হত্যাকারীর তাওবা

ইচ্ছাকৃত মানুষ হত্যাকারীর ওপর তিনটি হক বর্তায়। আল্লাহর হক, নিহত ব্যক্তির হক ও ওয়ারিশদের হক। আল্লাহর হক একমাত্র তাওবার দ্বারা আদায় করতে হবে। ওয়ারিশদের হক হলো তাদের কাছে নিজেকে সমর্পণ করতে হবে, যেন তারা তার থেকে বদলা নিতে সমর্থ হয় (যদি ইসলামী বিধান কোনো দেশে জারি থাকে)। হয়তো কিসাস নিয়ে অথবা মুক্তিপণ নিয়ে বা ক্ষমা নিয়ে কিসাস কার্যকর করা হবে।

এরপর বাকি থাকে নিহত ব্যক্তির অধিকার, যা এ দুনিয়ায় পূরণ করা সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে ইসলামী আইনজ্ঞরা বলেন, যদি হত্যাকারী খাঁটিভাবে তাওবা করে, তাহলে আল্লাহ তার ওপর নিহত ব্যক্তির হক উঠিয়ে নেবেন এবং কিয়ামতের দিন নিজের পক্ষ থেকে নিহত ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণ দিয়ে দেবেন। আর এটি সর্বোত্তম অভিমত। (মাদারেজুস সালেকিন : ১/২৯৯)

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বু বৃহ শুক্র
 
১০১১
১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭৩০  

Copyright© 2024 All reserved